বুধবার যুক্তরাষ্ট্রের পার্লামেন্ট ভবন ক্যাপিটল ভবনে ট্রাম্প–সমর্থকদের হামলার পর প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে হোয়াইট হাউস থেকে বিতাড়নের দাবি জোরালো হচ্ছে। কেউ দাবি জানাচ্ছেন, ভাইস প্রেসিডেন্ট মাইক পেন্সকে উদ্যোগী হতে। আবার কেউ ট্রাম্পকে অভিশংসন করার দাবি জানিয়েছেন।
হঠাৎ করেই নিয়মানুযায়ী ক্ষমতা হস্তান্তরের ট্রাম্পের ঘোষণাকে মার্কিন সংবিধানের ২৫তম সংশোধনী কার্যকর করা ঠেকাতেই তার আরেকটি পদক্ষেপ বলে মনে করেন অনেক মার্কিনিই।সংবিধানের এ সংশোধনীর ৪ অনুচ্ছেদে বলা আছে, প্রেসিডেন্ট যদি দায়িত্ব পালনে অক্ষম হন, তাহলে ভাইস প্রেসিডেন্ট ও মন্ত্রিসভার সদস্যদের সিংহভাগ একমত হয়ে প্রেসিডেন্টকে দায়িত্ব থেকে অপসারণ করতে পারেন।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ক্ষমতার মেয়াদ শেষ হতে আর মাত্র ১৩ দিন বাকি। তবে বুধবার দেশটির পার্লামেন্ট ভবন ক্যাপিটল ভবনে ট্রাম্প–সমর্থকদের হামলার পর অনেক মার্কিনির কাছেই এই ১৩ দিন অনেক বেশি দীর্ঘ মনে হতে পারে। কারণ, ক্ষুব্ধ ট্রাম্প যেকোনো বিপর্যয় ডেকে আনতে পারেন। শুধু তাই নয়, যুক্তরাষ্ট্রের ২২০ বছরের ইতিহাসে এই প্রথম শান্তিপূর্ণ ক্ষমতা হস্তান্তর নিয়েও সংশয় দেখা দিয়েছে।
বার্তা সংস্থা এএফপির খবরে জানানো হয়, মার্কিন কংগ্রেসের উচ্চকক্ষ সিনেটে সংখ্যালঘিষ্ঠদের নেতা ডেমোক্র্যাট সিনেটর চাক শুমার এক বিবৃতিতে বলেছেন, ক্যাপিটল ভবনে গতকাল (বুধবার) যা ঘটেছে, তা প্রেসিডেন্টের উসকানিতে যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ।
এই প্রেসিডেন্টের আর এক দিনও ক্ষমতায় থাকা উচিত নয়। চাক শুমার বলেছেন, ভাইস প্রেসিডেন্ট ও মন্ত্রিসভা যদি পদক্ষেপ নিতে অস্বীকৃতি জানায়, তাহলে কংগ্রেসের উচিত প্রেসিডেন্টকে অভিশংসিত করার উদ্যোগ নেওয়া ইলিনয় থেকে নির্বাচিত প্রতিনিধি পরিষদের রিপাবলিকান সদস্য অ্যাডাম কিনজিঞ্জারও ২৫তম সংশোধনী কার্যকর করার আহ্বান জানিয়েছেন।
তিনি বলেছেন, এই বিভীষিকাময় অধ্যায়ের সমাপ্তি টানতে ২৫তম সংশোধনী কার্যকর করার এখনই সময়। প্রেসিডেন্ট দায়িত্ব পালনে অযোগ্য। তিনি অসুস্থ। এ ছাড়া প্রতিনিধি পরিষদে ডেমোক্র্যাট সদস্য ইলহান ওমর ও আলেক্সান্দ্রিয়া অকাসিও কর্তেজের নেতৃত্বে একদল আইনপ্রণেতা পৃথকভাবে ঘোষণা দিয়েছেন, তাঁরা কংগ্রেসে প্রেসিডেন্টকে অভিশংসনের প্রস্তাব আনতে প্রস্তুত।
এদিকে হোয়াইট হাউসের ভেতরে বুধবার রাতটা কেটেছে ট্রাম্পের ক্ষোভে ফেটে। ক্ষমতা হাতছাড়া হওয়ার বিষয়টিকে এখন তিনি দেখছেন ভাইস প্রেসিডেন্ট মাইক পেন্সের বিশ্বাসঘাতকতা হিসেবে।